
জেলা পরিভ্রমন (ক্রমান্বয়ে) :
১। মাগুরা
২। ঝিনাইদহ
৩। যশোর
৪। সাতক্ষীরা
৫। খুলনা
৬। বাগেরহাট
৭। গোপালগঞ্জ
প্রতিটা জেলায় পদচিহ্ন রাখার নিয়তেই আমার এই ভ্রমণ। তাই খুব পপুলার কোন প্লেস ছাড়া অন্য কোথাও যাওয়া হয়নি।
এই ভ্রমণের সবচেয়ে মজার ব্যাপার ছিল রাস্তা -ঘাট। এত চমৎকার ; নিজে চোখে না দেখলে বিশ্বাস ই হতে চাবে না। ঝাপা (যশোর) থেকে সাগরদাড়ি (যশোর) এর রাস্তা না বললেই নয়!!
মনের খোরাক, চোখের খোরাক ২ টাই মিলবে হেথায়।
এবার একটু বর্ণনা তে আসি।
১ম দিন
৭ তারিখ ভোর ৬ টায় নারায়ণগঞ্জ (শহর) হতে রওনা হয়ে সাইনবোর্ড এলাকায় আসি। সেখান থেকে (নীলাচল) নামের বাসে সরাসরি পাটুরিয়া ঘাট (ভাড়া ১৫০/-) এ এসে নামি সকাল ৮.৩০ এ।
সেখানেই আমার সাথে ১ জন কলিগ যোগ দেয়। ২ জন নাস্তা সেরে ৯.৩০ এর মধ্যেই ফেরী পারাপার হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে যাই। তারপর রিকশায় বাস স্ট্যান্ড। সেখান থেকে ডিরেক্ট মাগুরা। মাগুরায় সিদ্ধেশ্বরী মঠ ঘুড়ে ঝিনাইদহ এর মিয়ার দালান ও এশিয়ার বৃহত্তম বট গাছ ঘুরলাম। সেখান থেকে রাতে যশোর পৌঁছে নাইট স্টে করি।
২য় দিন
সকাল ৮ টার মধ্যেই হোটেল ত্যাগ করে হাজী মুহাম্মদ মহসীন এর বাড়ী (ইমাম বাড়ী) ঘুরে চলে যাই ঝাপা (যশোর) ভাসমান সেতু তে, যা কিনা ড্রামের তৈরী। সেখান থেকে সাগরদাড়ি (মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি) হয়ে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটিয়া নামক জায়গায় যাই। সেখানে রয়েছে কপোতাক্ষ নদীর উপর ব্রীজ। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে সাতক্ষীরা শহরে আর ঢুকা হয়নি। সেখান থেকে বিকেল ৩ টায় খুলনায় পৌঁছে যাই। তখনি খুলনা জেলা বাস স্ট্যান্ড (রূপসা বাস স্ট্যান্ড) এ যাই, কারণ ঐখানেই রূপসা নদী। তারপর যাই খান জাহান আলী ব্রীজ বা রুপসা ব্রীজ এ। আনুমানিক বিকাল ৬ টায় আসি শহরেরই কেন্দ্রস্থল শহীদ হাদিস পার্ক এ। রাতে গেলাম খুলনা রেল স্টেশন এ আর শহর ঘুরলাম।
৩য় দিন
ঠিক আগের দিনের মতন সকাল ৮ টার আগেই হোটেল ত্যাগ করি। যিরো পয়েন্ট এ এসে চুইঝাল খেয়ে বাগেরহাটের বাসে উঠি। বেশ কিছু মসজিদ ( বিবি বেগনী, চুনাখোলা মসজিদ, সিঙ্গাইর মসজিদ) ঘুড়ে ঢুকে পড়ি ষাটগম্বুজ মসজিদ এ। সেখান থেকে খান জাহান আলীর মাজার। দুপুর। ১২.৪৫-১ টার মধ্যে শেষ।
এবার ঢাকা ফেরার পালা। কিন্তু হঠাৎ সিদ্ধান্তে গোপালগঞ্জ এর টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত হল, যেহেতু গোপালগঞ্জ এর উপর দিয়েই আমাদের আসতে হবে। যেমন চিন্তা তেমন কাজ। বিকেল ৩ – ৩.১৫ এর মধ্যে টুঙ্গিপাড়া তে প্রবেশ করলাম। টুঙ্গিপাড়ার ইতিহাস অবলোকন করে বিকাল ৪.৪৫ এ গোপালগঞ্জ এর হাইওয়ে মোড় (গোনাপাড়া) এ আসলাম। সেখান থেকে বিকাল ৫.১৫ এ ডিরেক্ট গুলিস্তান(মাওয়া ঘাট হয়ে) এর বাস এ চড়লাম । আমি রাত ১০.৩০ এ পোস্তগোলা নেমে ১১.০০ এর ভিতর নারায়ণগঞ্জ এসে পৌঁছে যাই।
কিছু মেজর খরচ :
নারায়ণগঞ্জ (সাইনবোর্ড) থেকে পাটুরিয়া ঘাট : নীলাচল ( ১৫০/-)
যশোর হোটেল ভাড়া :এক রুম ডাবল বেড ৫০০/- (হোটেল ম্যাক্স)
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটিয়া থেকে খুলনা :বাস ভাড়া ৮০/-
খুলনার হোটেল ভাড়া : ৪৫০/-
গোপালগঞ্জ (গোনাপাড়া) থেকে ঢাকা (বাস) : ৫৫০/-
যা কিছু মিস না করা উত্তম :
১। ঝিনাইদহের সুইট হোটেল এর খাবার
২। ঝিনাইদহের “ঘোষ মিস্টি ” অবশ্যই খাবেন
৩। যশোর এর মনিহার হল
৪। খুলনায় চুইঝাল (যিরো পয়েন্ট মোড় এ)
আমার গন্তব্য স্থল গুলো :
১। মাগুরা : সিদ্ধেশ্বরী মঠ (মোঘল আমলে নির্মিত)
২। ঝিনাইদহ : শহর, মিয়ার দালান, বটবৃক্ষ
৩। যশোর : শহর, মণিহার সিনেমা হল, ইমাম বাড়ি (হাজী মুহাম্মদ মহসীন এর বাড়ি), ঝাপা তে ভাসমান ড্রামের সেতু, মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি।
৪। সাতক্ষীরা : পাটকেলঘাটা কপোতাক্ষ নদীর ব্রীজ, নিচে রয়েছে শশ্বান ঘাট
৫। খুলনা : রুপসা নদী, খান জাহান আলী ব্রিজ, শহীদ হাদিস পার্ক, রাতের স্টেশন ও চমৎকার শহর
৬। বাগেরহাট : বিবি বেগনী, চুনাখোলা মসজিদ, সিঙ্গাইর মসজিদ, ষাটগম্বুজ মসজিদ, খান জাহান আলীর মাজার
৭। গোপালগঞ্জ : টুঙ্গিপাড়া